সীমান্তে সতর্ক পুলিশ, রানিনগরে ধৃত ৬ বাংলাদেশি!

নিউজ ফ্রন্ট, মুর্শিদাবাদ, ৩১ জুলাই: মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানা এলাকায় গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ছয় বাংলাদেশি নাগরিক ও এক ভারতীয় এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনা ফের একবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশের প্রবণতার চিত্র স্পষ্ট করেছে।

রানিনগর থানার পুলিশ বুধবার রাতে কাতলামারি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ইউসুফের বটতলা এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট সূত্র থেকে তথ্য পেয়ে এই অভিযান চালানো হয় এবং সেই অনুযায়ী অনুপ্রবেশকারীরা ধরা পড়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকরা হলেন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (২০), কেতাবুর আলি (২৬), কামালউদ্দিন রহমান (২৮), কালিমুদ্দিন রহমান (২৫), মোহাম্মদ সেলিম (৩৭), এবং মোহাম্মদ জুয়েল রানা (২৪)।

ধৃতরা বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ, রাজশাহী এবং ফেনী জেলার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এই বেআইনি অনুপ্রবেশে সাহায্য করার অভিযোগে পুলিশ রানিনগরেরই বাসিন্দা আসরাইল শেখ (২৯)-কে ধরেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে সে দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুপ্রবেশে সাহায্য করে আসছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসপ্রিত সিং জানান, “রানিনগর থানায় ইতিমধ্যে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা (Suo Moto) রুজু করা হয়েছে। আজ ধৃত সাতজন অভিযুক্তকে লালবাগ আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (ACJM)-এর এজলাসে পেশ করে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে।”

রানিনগর থানার এসআই বিদ্যুৎ সরকার জানান, বিচারক ধৃতদের ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনার পর মুর্শিদাবাদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় পুলিশ নজরদারি আরও বাড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও বলা হয়েছে, কোনও অপরিচিত মুখ দেখলেই যেন দ্রুত পুলিশকে খবর দেন।

এই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে ২৯ জুলাই মুর্শিদাবাদের লালগোলার চাটাইডুবি এলাকা থেকে লালগোলা থানার পুলিশ অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী তিনজন বাংলাদেশীকে গ্রেপ্তার করে। ২০ জুলাই একই অভিযোগে মুর্শিদাবাদ থেকে আরও ৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক৩ জন ভারতীয় দালাল গ্রেপ্তার হয়।

মুর্শিদাবাদ জেলা, যেটি পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ মুসলিম জনসংখ্যার জেলা এবং বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী, সেখান থেকে বারবার এমন বেআইনি অনুপ্রবেশের খবর উঠে আসছে। অনুপ্রবেশকারীদের পেছনে চোরাচালানকারী ও দালাল চক্র কাজ করে, যারা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে এই কাজ করে থাকে।

পুলিশ জানিয়েছে, ৫ দিনের হেফাজতের সময় এই চক্রের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, তাদের অনুপ্রবেশ পথ, ও অন্য দালালদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *