৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন শাহরুখ খান ও বিক্রান্ত মেসি। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন রানি মুখার্জি। সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতেছে ‘টুয়েল্ভথ ফেল’ (12th Fail)।
নিউজ ফ্রন্ট, ১ অগাস্ট, নয়াদিল্লি –
বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খান এবং অভিনেতা বিক্রান্ত মেসি তাদের অসাধারণ অভিনয়ের জন্য ৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন। একই সঙ্গে, রানি মুখার্জি তার দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন। সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে হিন্দি ছবি ‘টুয়েল্ভথ ফেল’। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে জুরি (ফিচার ফিল্ম) চেয়ারম্যান আশুতোষ গোয়ারিকর এই পুরস্কার ঘোষণা করেন।
সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে বিক্রান্ত ম্যাসি অভিনীত ‘১২তম ফেল’। অনুষ্ঠান চলাকালীন ফিচার ফিল্ম বিভাগের জুরি চেয়ারম্যান অশুতোষ গোয়ারিকর এবং নন-ফিচার বিভাগের চেয়ারম্যান পি শেশাদ্রি বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
নন-ফিচার বিভাগে সৌম্যজিৎ ঘোষ দস্তিদার পরিচালিত ‘ফ্লাওয়ারিং ম্যান’ পেয়েছে সেরা নন-ফিচার ফিল্ম পুরস্কার। পিয়ুষ ঠাকুর পেয়েছেন সেরা পরিচালকের সম্মান। ‘গড, ভালচার অ্যান্ড হিউম্যান’ ডকুমেন্টারিটি সেরা প্রামাণ্যচিত্র নির্বাচিত হয়েছে।
‘রকি ঔর রানী কি প্রেম কাহানি’ চলচ্চিত্রটি পেয়েছে সেরা জনপ্রিয় বিনোদনমূলক চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ‘স্যাম বাহাদুর’ নির্বাচিত হয়েছে জাতীয়, সামাজিক ও পরিবেশগত মূল্যবোধ প্রচারকারী চলচ্চিত্র হিসেবে।
ভি জি প্রকাশ কুমার তামিল ছবি ‘ভাত্তি’–র জন্য পেয়েছেন সেরা সংগীত পরিচালক পুরস্কার।
শিল্পা রাও (হিন্দি ছবি জওয়ান) ও পিভিএন এস রোহিত (তেলুগু ছবি বেবি) হয়েছেন সেরা প্লেব্যাক সিঙ্গার।
মালায়ালাম চলচ্চিত্র ‘পুক্কালাম’ পেয়েছে সেরা সম্পাদনার পুরস্কার, মারাঠি ছবি ‘নাল ২’ পেয়েছে সেরা শিশু চলচ্চিত্র ও ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ পেয়েছে সেরা চিত্রগ্রহণের পুরস্কার।
উৎপল দত্ত নির্বাচিত হয়েছেন সেরা চলচ্চিত্র সমালোচক হিসেবে।

শাহরুখ খানের প্রথম জাতীয় পুরস্কার: ৩৫ বছরের অপেক্ষার অবসান
প্রায় ৩৫ বছরের দীর্ঘ কর্মজীবনের পর অবশেষে তাঁর প্রথম জাতীয় পুরস্কার পেলেন বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খান। পুরস্কার প্রাপ্তির পর শাহরুখ খান ‘এক্স’-এ তাঁর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে লেখেন, “জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত করার জন্য ধন্যবাদ। জুরি, আইঅ্যান্ডবি মন্ত্রককে ধন্যবাদ… এই সম্মানের জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ। আমার প্রতি এই ভালোবাসায় আমি অভিভূত।”
শাহরুখ খানের কর্মজীবনের দিকে তাকালে দেখা যায়, তিনি একজন থিয়েটার অভিনেতা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন, তারপর টেলিভিশনে কাজ করেন এবং সেখান থেকে সিনেমায় এসে সবচেয়ে সফল অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ‘দিওয়ানা’ ছবি দিয়ে তার অভিষেক হয় এবং ‘বাজিগর’ ও ‘ডর’-এর মতো ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করার পর তিনি ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ ছবির মাধ্যমে ‘কিং অফ রোম্যান্স’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। গত কয়েক বছরে তিনি তার কাজের ধারা পরিবর্তন করে ‘পাঠান’ এবং ‘জওয়ান’-এর মতো অ্যাকশন ছবিতে মনোযোগ দিয়েছেন।
তবে, তাঁর এই দীর্ঘ যাত্রাপথ মোটেও মসৃণ ছিল না। বিভিন্ন সময় কাজের জন্য তাকে শারীরিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে ‘শক্তি: দ্য পাওয়ার’ ছবির একটি অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে তিনি মেরুদণ্ডে আঘাত পান। এরপরও তিনি অনেক ছবিতে ব্যথা নিয়েই কাজ চালিয়ে গেছেন। ২০০৩ সালে তার অবস্থার অবনতি হলে লন্ডনে তার মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার করতে হয়।
বিক্রান্ত মেসিও এই ক্ষেত্রে শাহরুখ খানের পথ অনুসরণ করেছেন। তিনিও একজন টেলিভিশন অভিনেতা হিসেবে কাজ শুরু করে সিনেমায় এসে নিজেকে একজন অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।